top of page
Writer's pictureThink-Tank

নিষ্ঠাবান সমাজসেবক ও সফল ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান

স্বাধীনতা পরবর্তী ৭০-এর দশকে বাংলাদেশের ব্যাবসা ও শিল্প খাতের অমিত সম্ভাবনা যেসব ব্যবসায়ী উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন,সালমান এফ রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে এখন তিনি বেশী পরিচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও একজন নিষ্ঠাবান সমাজসেবক হিসেবে।


বাংলাদেশের প্রথম সারির শিল্পউদ্দোক্তাদের মধ্যে অন্যতম সালমান এফ রহমান। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ বেসরকারী ব্যাবসায়ীক গোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা যেটা দেশের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট কোম্পানি। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের আছে সবকিছুর মধ্যেই সম্ভাবনা ও সুযোগ চিহ্নিত করার অসাধারন ক্ষমতা। সেই দক্ষতা তাকে দেশের একজন সফল ব্যবসায়ী হতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালি ও টেকশই করার জন্য তিনি অনেক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং যার ফলে দেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়ে গিয়েছে।


সালমান এফ রহমান ১৯৫১ সালের ২৩ই মে ঢাকার দোহারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম ফজলুর রহমান এবং মাতা সৈয়দা ফাতেমা রহমান। ১৯৬০এর শেষের দিকে স্নাতক সম্পন্ন করেন পাকিস্তানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।


সালমান এফ রহমান ১৯৬৬ সালে পারিবারিক ভাবে একটি পাটকলের মালিক ছিলেন এবং সেটি তার ভাই সোহেল এফ রহমানের সঙ্গে পরিচালনা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সেই পাটকলটি জাতীয়করন করা হয়। এরপর তিনি এবং ভাই সোহেল এফ রহমান বাংলাদেশ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্ট কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠণ করে। কোম্পানিটি ব্রিটেন, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডে সামুদ্রিক খাবার ও হাড়চূর্ণ রপ্তানি শুরু করেন। সে সময় দেশের বৈদেশিক বিনিময় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ার ফলে সামুদ্রিক খাবার ও হাড়চূর্ন রপ্তানির পরিবর্তে সেসব দেশ থেকে ওষুধ আমদানি করতেন। পরবর্তিতে সেই কোম্পানির নাম পরিবর্তিত হয়ে বেক্সিমকো হয়ে যায়। ১৯৭৬ সালে দুই ভাই মিলে বেক্সিমকো ফার্মা গঠন করেন। দুবাই ভিত্তিক Galadari Brothers Group এর সহযোগীতায় দেশের প্রথম বেসরকারী ব্যাংক আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক স্থাপন করেন ১৯৮২ সালে। ১৯৮৫ তার শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের ৩০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন এবং বর্তমানে তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


বর্তমানে বেক্সিমকো গ্রুপ প্রায় ৬০,০০০ কর্মী নিয়ে তাদের ব্যাবসা পরিচালনা করছে। বেক্সিমকো গ্রুপ প্রায় সব শিল্প ও ব্যাবসার সাথেই সম্পৃক্ত যেমন, পরিবহন, মিডিয়া, টেক্সটাইলস, ঔষধ শিল্প, সিরামিকস সহ আরও অন্যান্য। বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট কোম্পানি লিমিডেট, বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস্, শাইনপুকুর সিরামিকস্ এবং বেক্সিমকো সিনথেটিক।


বেক্সিমকো গ্রুপ এখন বিশ্বের ৪৩টি দেশে পণ্য রপ্তানী করে থাকে। নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান প্রথম বাংলাদেশী বিলিয়নিয়ার হিসেবে চীন ভিত্তিক হুরুন গ্লোবাল রিচ এর রিপোর্টে ২২৫২ বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে তার অবস্থান ১৬৮৫ তম স্থান অধিকার করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, তার সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার।


সালমান এফ রহমান ৯০-র দশকের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যর ব্যাপক সম্প্রসারণের পাশাপাশি রাজনীতিতে জরিয়ে পরেন। ১৯৯০ সালে ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আন্দোলন’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। অবশ্য এর কিছূদিন পরে আওয়ামী লীগ-এ যোগ দেন। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০১ সালে সাধারন নির্বাচনে ঢাকার দোহার থেকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।


২০০৭/৮ সালে সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সালমান এফ রহমানকে প্রায় দুই বছর জেলে থাকতে হয়। তার বিরুদ্ধে আনা কোন অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। পরবর্তীতে হাইকোর্ট সব অভিযোগ থেকে তাকে মুক্ত করে।


বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী উন্নয়ন খাতের উপদেষ্ঠা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ইংরেজী নিউজ চ্যানেল ইন্ডেপেন্ডেন্টের মালিক। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন এটিসিও এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-এর পরিচালক ছিলেন। তিনি দেশের নামকরা ফুটবল ক্লাব আবহানী লিমিটেড এর চেয়ারম্যান।


সালমান এফ রহমান বিভিন্নি সামাজিক কার্যক্রমের সাথেও সংযুক্ত। সম্প্রতি মায়ানমারে নির্যাতিত বাংলাদেশ পালিয়ে আসা হাজার হাজার রহিঙ্গা শরনার্থীদের সাহাযার্থে সালমান এফ রহমান কক্সবাজারে ছুটে গেছেন। বেক্সিমকো গ্রুপ রোহিঙ্গাদের বিনামুল্যে সেবা দেওয়ার জন্য সেখানে চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এছাড়াও সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের স্পনসর করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এটি প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নে ‘প্রয়াস’ নামে একটি সংস্থা গঠন করেছে। তিনি বিভিন্ন সচেতনমুলক প্রচারনা সাথেও সম্পৃক্ত যেমন, হাঁপানি দিবস, বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস, অস্টিওপোরোসিস দিবস, ডায়াবেটিস দিবস, এইডস দিবস।

80 views0 comments

Commentaires


bottom of page