মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জয় বাংলা স্লোগান কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ২০১৯ সালের ১০ই মার্চ সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রেসিডেন্টের ভাষণের উপর দেয়া ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় জয়বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সালমান এফ রহমান তার প্রস্তাবে বলেছিলেন জয়বাংলা কোন রাজনৈতিক দলের স্লোগান নয়। বাংলাদেশের আপামর জনগণের শ্লোগান এটি। কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের এই শ্লোগান দিতে বিধায় পড়া উচিত নয়। সালমান এফ রহমান আরো উল্লেখ করেছিলেন যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক' ৭ ই মার্চের ভাষণ জয়বাংলা বলেই শেষ করেছিলেন।
সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা জয় বাংলা' বলতে দ্বিধা করেন কারণ তারা মনে করেন এই শ্লোগান দিলে তারা দলীয় হয়ে যাবেন। তারা নির্দলীয় থাকতে চান। কিন্তু জয়বাংলাতো একটি নির্দলীয় স্লোগান। সেদিনের সেই ভাষণে সালমান এফ রহমান মাননীয় স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি আজকে আপনার মাধ্যমে প্রস্তাব রাখছি এই মহান সংসদে, আমরা ঠিক যেমন সংবিধান সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা ঘোষণা করেছি, ঠিক তেমনই জয়বাংলা কে আমরা জাতীয় স্লোগান হিসেবে যেন ঘোষণা করি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে যে, সংবিধানিক পদাধিকারী কাল পদাধিকারীরা দেশে এবং দেশের বাইরে কর্মরত সরকারি স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকল জাতীয় দিবস উদযাপন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করবেন। প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা রয়েছে যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশ সমাপ্তির পর ও সভা সেমিনারে বক্তব্য শেষে শিক্ষকরা ও ছাত্র-ছাত্রীরা জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করবেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিপাগল বাঙালিকে জয় বাংলা স্লোগান প্রবলভাবে প্রেরণা যুগিয়েছিল। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এত তীব্র এত তাৎপর্যপূর্ণ স্লোগান এর আগে কখনো আসেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় সফল অপারেশনের শেষে এবং যুদ্ধ জয়ের পর অবধারিতভাবে মুক্তিযোদ্ধারা চিৎকার করে বলতেন জয় বাংলা।
জয় বাংলা স্লোগান এর উৎপত্তি যদিও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময়, ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলনের সময় থেকে এই স্লোগানটি জনপ্রিয় হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ৭ ই মার্চের ভাষণে যখন জয়বাংলা বলেন এরপর থেকে স্লোগানটি বাঙালির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়ে।
সালমান এফ রহমান অনুভব করেছিলেন যে জয়বাংলা বাঙ্গালি জাতির প্রানের স্লোগান। তিনি অনুভব করেছিলেন এই স্লোগানের শক্তি। তাই তিনি চেয়েছিলেন এই স্লোগান যেন জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
Comments